শরীরের অসুস্থতা নিয়ে সবাই চিন্তিত, কিন্তু মনের অসুখ নিয়ে সবাই চিন্তা করে না। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপে দিন কাটাতে গিয়ে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, মাদকাসক্ত বা আত্মহত্যার শিকার হন।
তাই ফিট ও সুস্থ থাকতে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া জরুরি। এই ব্যস্ত জীবনে স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা বাড়ছে সবার মধ্যে। দীর্ঘ সময় এভাবে থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়।
ব্রিটিশ জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত 'কান্ট্রি পেপার অন মেন্টাল হেলথ বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১৮.৭ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন মানসিক রোগে ভুগছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির পর মানসিক রোগের প্রকোপ বেড়েছে। নিজেকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনার।
তাই মানসিক রোগকে শিকড় থেকে বাঁচাতে সময় থাকতেই সচেতন হতে হবে। এছাড়াও, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে 9টি কাজ করুন-
যথেষ্ট ঘুম
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম মস্তিষ্কের রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই রাসায়নিকগুলি আমাদের মেজাজ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে।
আমরা যদি পর্যাপ্ত ঘুম না করি তবে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এর ফলে হতাশা ও উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। তাই পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।
পুষ্টিকর খাবার খান
আরো পড়ুন :👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
প্রোটিন জাতীয় খাবার কী। প্রোটিন জাতীয় ফল।
পুষ্টিকর খাবার শুধু শরীরের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, মনের জন্যও উপকারী। আয়রন এবং ভিটামিন বি 12 এর মতো কিছু খনিজ উপাদানের ঘাটতি মেজাজ পরিবর্তনের জন্য দায়ী।
তাই সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। আপনি যদি খিটখিটে মেজাজ, বিষণ্নতা বা উদ্বেগে ভোগেন তবে কফি খাওয়া বন্ধ করুন।
অ্যালকোহল, ধূমপান এবং মাদক এড়িয়ে চলুন
অনেকে বিষণ্ণ হয়ে পড়ে এবং ধূমপান ও মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু জানেন কি, এগুলো বিষণ্ণতা দূর করে না বরং শরীর ও মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে শরীরে থায়ামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। থায়ামিন মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এর ঘাটতি স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মনোযোগের অভাব, বিভ্রান্তি এবং চোখের সমস্যা হতে পারে। আর ধূমপান করলে এতে থাকা নিকোটিন শরীর ও মস্তিষ্ক উভয়েরই ক্ষতি করে। আপনি পরে ধূমপান বন্ধ করলে আপনি আরও খিটখিটে এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে পারেন। তাই মাদকমুক্ত জীবনযাপন করুন।
সূর্যালোক প্রয়োগ করুন
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর একটি বড় উৎস। ভিটামিন ডি শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি মস্তিষ্ক থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ বের করে দেয়। ফলস্বরূপ, মেজাজ উন্নত হয়। কারণ এন্ডোরফিন ও সেরোটোনিনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তবে রোদে যাওয়ার সময় ত্বক ও চোখকে নিরাপদ রাখুন।
প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা থেকে ২ ঘণ্টা সূর্যের আলো পান। শীতকালে অনেকেই বিষণ্নতায় ভোগেন। কারণ তখন সূর্য কম দেখা যায়। এটি সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার (এসএডি) নামে পরিচিত। তাই পর্যাপ্ত সূর্যালোক পান, এতে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
দুশ্চিন্তা দূরে রাখুন
দৈনন্দিন জীবনের কিছু সমস্যার তালিকা করুন। তারপর সমাধানের উপায় বের করুন। অপ্রয়োজনীয় মায়ায় লিপ্ত হবেন না। আপনি যখন ঘুমাতে সমস্যায় পড়েন, তার মানে আপনি আরও চিন্তিত!
ব্যায়াম নিয়মিত
আরো পড়ুন :👇👇👇👇👇👇👇👇👇
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। কারণ আপনি যত বেশি সক্রিয় থাকবেন, মস্তিষ্কের রাসায়নিকগুলি তত বাড়বে। যা ভালো মেজাজ বজায় রাখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ব্যায়ামের অভাবে মেজাজ খারাপ হতে পারে।
আপনি উদ্বিগ্ন, চাপ, ক্লান্ত এবং অলস বোধ করতে পারেন। তাই শরীর ও মন সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ম্যারাথন দৌড় বা ফুটবল খেলার দরকার নেই, আপনি নিয়মিত হাঁটাহাঁটি এবং শারীরিক পরিশ্রম করে ফিট থাকতে পারেন।
যা ভালবাস তাই করো
আপনি যদি ভ্রমণ, কেনাকাটা বা পেইন্টিং পছন্দ করেন তবে এটি করুন। আপনি যে জিনিসগুলি উপভোগ করেন তা করা আপনাকে আরও ভাল বোধ করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা অন্যের খরচে নিজের সুখকে দমিয়ে রাখে তাদের বিরক্তি ও অসুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই নিজের মঙ্গলকে প্রাধান্য দিন।
অন্যদের সাথে মিশে যান
অন্যদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করুন। সুযোগ পেলেই মানুষের সাথে কথা বলুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে অন্যদের সাথে কথা বলার মাত্র 10 মিনিট স্মৃতিশক্তি এবং পরীক্ষার স্কোর উন্নত করতে পারে! তাই মানুষের সাথে মেলামেশা করার চেষ্টা করুন।
মানুষের পাশে দাঁড়ান
কাউকে সাহায্য করা অন্যরকম ভালো থাকার অনুভূতি তৈরি করে। তাই অন্যের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন।
খাদ্য বা জামাকাপড় কিনুন বা অল্প টাকা দিয়ে একজন গরীবকে সাহায্য করুন। দেখবেন আপনার মন ভালো হয়ে যাবে।
তাহলে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে হতাশ না হয়ে বিশ্ব সম্পর্কে ধারণা তৈরি হবে। অসহায় বোধ করার আগেই ক্ষুধার্ত মুখের ছবি আপনার মনে ভেসে উঠবে। ফলে অন্যের জন্য কিছু করার ইচ্ছা বাড়বে। এর মাধ্যমে আপনি জীবনে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ পাবেন।
আপনি যদি মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করেন তবে অন্যের সাহায্য নিন। মুখ বন্ধ রাখবেন না। আপনার সমস্যা সবার সাথে শেয়ার করুন। কারণ অতিরিক্ত চাপ আপনাকে বিষণ্ণ করে তুলতে পারে। অনেকে মনে করেন আপনার মন ভালো না কাউকে বললে তারা বলবে আপনি পাগল!
এই ধারণা থেকে মুক্তি পান। মানুষের শরীর যেমন সবসময় ভালো থাকে না, তেমনি মনও সবসময় ভালো থাকে না। তাই মানসিক চাপ অনুভব করলে কাউন্সেলিং বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। প্রথমে পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।
আজ ৩১তম বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এই দিনটি 1992 সালে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছিল। এই দিনটি প্রতি বছর 10 অক্টোবর পালিত হয়।
এবারের প্রতিপাদ্য 'মানসিক স্বাস্থ্যকে সবার জন্য বিশ্বব্যাপী অগ্রাধিকারে পরিণত করুন'। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হল মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং বিশ্বজুড়ে মানসিক সুস্থতাকে সমর্থন করা।
এই ৯ টি কাজ মেনে চলেন তাহলে আপনার মাথা সমস্যা মানসিক সমস্যা মনের সমস্যা ও দুর্বল দূর হবে মন সব সময় খুশি থাকবে ইনশাআল্লাহ।
0 Comments
Health Tips 10234. healthy. behavioral health. healthy food. healthcare. clinics. mental health. health department. physicians. public health. health care. health ministry. health tips. physical activity. health economics. global health. one health. social health. health informatics.
healthcare. mental health.